আজ যে পশ্চিমা দুনিয়া বিজ্ঞানের জয়গান করে তার মুলে কি ছিল? নাস্তিকতা বিজ্ঞানের উপর ভরে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের প্রতি আঙ্গুলি তুলছে, সেই বিজ্ঞান কার দান কোথা থেকে এল? তা জানতে ধারা-বাহিকভাবে লেখা ৪ টি পর্বে The Origin Of Science -(বিজ্ঞানের উৎপত্তি) পড়ুন। লেখাটি ইনফোটেকলাইফের নিজস্ব নয়। এটি সর্ব প্রথম প্রকাশিত হয় http://askislambd.weebly.com
Infotech Ad Top new
Infotech ad post page Top


Home
Unlabelled
The Origin Of Science -(বিজ্ঞানের উৎপত্তি) পর্ব-৩
The Origin Of Science -(বিজ্ঞানের উৎপত্তি) পর্ব-৩
Share This
গত দুই পর্ব যারা খুব ভালভাবে পড়েছেন আশা করি তারা বুঝতে পেরেছেন যে বিজ্ঞানের প্রকৃত উৎস হল ঐশ্বরিক। এই পর্বে আমি মূলত ইউরোপের বিজ্ঞান বিপ্লবের দুইজন ব্যক্তির কথা আলোচনা করব যাদেরকে সে বিপ্লবের 'হিরো' বলা হয়।
এই দুইজনের একজন হলেন Copernicus আরেকজন হলেন Giordano Bruno। কোপার্নিকাস ও ব্রুনোকে মুক্তচিন্তার প্রতীক বলে অনেকে বিবেচনা করে। কোপার্নিকাস ও ব্রুনো দুইজনই বাইবেলের Geocentric Theory (পৃথিবীকেন্দ্রিক সৌরজগৎ) এর বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন এবং Heliocentric Theory (সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগৎ) কে উপস্থাপন করেছিলেন।
ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলায় এই দুইজনকে নাস্তিক ও Agnostic (অজ্ঞেয়বাদী)রা খুবই শ্রদ্ধার চোখে দেখে,এই দুইজন ছাড়া গ্যালিলিওকেও এরা শ্রদ্ধার চোখে দেখে। এই তিনজনের কথা উল্লেখ করে নাস্তিকরা ও Agnosticরা প্রায়ই বলে যে " ধর্মের সাথে বিজ্ঞান সাংঘর্ষিক , বিজ্ঞান ও ধর্ম আলাদা বিষয়" ।
আমাদের জাফর ইকবাল সাহেবও তার "একটুখানি বিজ্ঞান" বইতে গ্যালিলিওর কথা উল্লেখ করে ধর্মকে ইনডাইরেক্টলি খোঁচা দিয়েছে ।
আসলে নাস্তিক ও Agnostic রা ব্রুনো , গ্যালিলিওর ,কোপার্নিকাসের ধর্মবিরোধী কর্মকান্ডের কথা জোরে-শোরে প্রচার করলেও তাদের সম্পর্কে অনেক কথাই এরা সহজে বলে না। ব্রুনো , গ্যালিলিওদের বিজ্ঞানের প্রতি ভালবাসা সৃষ্টির পিছনে যে Hermes Trimegistus নামের একজন ধর্মীয় গুরু ছিলেন সে কথা এরা মুখেই আনে না। আমার তো মনে হয় এরা জানেই না এই ব্যাপারে! জানলে নিলর্জ্জ ও বেহায়ার মত ধর্মের বিরুদ্ধে বিজ্ঞানের অবস্থান প্রমাণ করতে এই ব্যক্তিদের উদাহরণ এরা ব্যবহার করত না।
এখন দেখি কিভাবে কোপার্নিকাস ও ব্রুনো Hermes বা ইদরীস (আঃ) এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন । (গ্যালিলিওর কথা নিউটনের সাথে পরের পর্বে আলোচনা করব, ইনশা'আল্লাহ্ )
ইউরোপের বিজ্ঞান বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল কোপার্নিকাসের লেখনী দ্বারা। কোপার্নিকাস তার On the Revolutions of the celestial spheres বইতে প্রথম Heliocentric Theory প্রকাশ করেছিলেন। ক্যাথলিক চার্চ যে শিকল দিয়ে বৈজ্ঞানিক চিন্তা-ভাবনাকে বন্দী করে রেখেছিল সে শিকলে প্রথম জোরালো আঘাত হানে কোপার্নিকাসের এই বইটা।
মূর্খ নাস্তিকের দল কোপার্নিকাসকে নিয়ে বাহাদুরি করলেও কোপার্নিকাস মূলত Hermes এর সাহায্য নিয়েই তার থিওরিটা তৈরী করেছিলেন। তিনি তো তার On the Revolutions of the celestial spheres বইতে Hermes Trimegistus এর কথা সরাসরি উল্লেখ করেছিলেন। এই বইয়ের ৩১ পৃষ্ঠায় কোপার্নিকাস বলেছিলেন--
" Accordingly (considering the sun's central position) , it is not foolish that it has been called the lamp of universe , or its mind , or its ruler . (It is ) Trismegistus' visible God... "
ধর্মবিরোধীরা কোপার্নিকাসের থেকে বেশি মাতামাতি করে ব্রুনোকে নিয়ে কারণ ব্রুনো ইতিহাসের সেরা খ্রিস্টানবিরোধী ছিল। কিন্তু তার মানে এই না যে ব্রুনো নাস্তিক ছিল কিংবা সে অন্য কোন ধর্মের অনুসারী ছিল না। ব্রুনো একজন কট্টর Hermeticist ছিল এবং সে Hemeticism ধর্মের প্রচারক হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন।
ব্রুনোর বিখ্যাত বই " On the infinite universe and worlds " এ ব্রুনো "Infinite Universe Theoryর " কথা বলেছিলেন ।ব্রুনো এই থিওরিটা প্রস্তুত করেছিলেন Hermes এর " Asclepius " বইয়ের সাহায্য নিয়ে।[ সূত্র: The Forbidden Universe by Lynn Picknett]
Hermes এর প্রতি ব্রুনোর এতটাই ভালবাসা ছিল যে ব্রুনো Giordaisti নামে একটা গুপ্তসংঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই গুপ্তসংঘের উদ্দেশ্য ছিল Hermeticism এর প্রচার করা এবং এটা প্রতিষ্ঠা করা। ব্রুনো বিশ্বাস করত যে খ্রিস্টান ধর্ম হল একটা বিকৃত ধর্ম , Hermes এর ধর্মকেই সে সত্য বলে বিশ্বাস করত। তার প্রতিষ্ঠিত এই সংঘের সদস্যরাও এই মতে বিশ্বাসী ছিলেন , হয়তো এই সংগঠন এখনো আছে কিংবা অনেক আগেই এর বিলুপ্তি ঘটেছে।
অনেকেই মনে করেন যে Heliocentric Theory প্রচারের দায়ে ব্রুনোকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিল কিন্তু সত্য কথা হল Hemeticism প্রচার করার দায়েই তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিল। এই ভুল তথ্যের কারণে অনেকে ব্রুনোকে বলে 'Martyr for Science' অথচ ব্রুনোকে বলা উচিত 'Martyr for Hemeticism ' । তাই অবাক লাগে যখন দেখি নাস্তিকরা ব্রুনোর উদাহরণ দিয়ে ধর্মকে পচায় এবং প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে বিজ্ঞানের সাথে আস্তিকতা সাংঘর্ষিক।
এই মূর্খের দলের কোপার্নিকাস ,ব্রুনো ,গ্যালিলিওর নামে মিথ্যাচার করে মানুষের মনে ধর্মবিরোধিতার বীজ বুনছে। বিশ্বাস না হলে জাফর ইকবালের কট্টর ভক্তদের দেখতে পারেন যারা কিনা ধর্মকে পচিয়ে নিজেদের যুক্তিবাদী মনে করে। অথচ বিজ্ঞানের প্রকৃত ইতিহাস দেখলে বুঝা যায় যে এরা কতটা মূর্খ।
শুধুমাত্র থিওরি ও হাইপোথিসিসের দ্বারাই বিজ্ঞানের জগৎ সৃষ্টি হয় নি। গুটিকয়েক থিওরি ও হাইপোথিসিস সম্পর্কে জানলেই বিজ্ঞান বুঝা যায় না। বিজ্ঞান সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে হলে বিজ্ঞানের ইতিহাস, Philosophy of Science সম্পর্কে জানতে হবে, কিভাবে থিসিস ও হাইপোথিসিসের সৃষ্টি হয় তা বুঝতে হবে, বুঝতে হবে "Inductive ও Abductive Inference"।
যারা বিজ্ঞানের সাহায্যে ধর্মকে পচাতে চায় তাদের প্রায় সবাই এইসব বিষয় সম্পর্কে জানে না , জানলেও জানে অস্পষ্টভাবে।
Infotech Post Bottom Ad New
Author Details
ইনফোটেকলাইফ.কম এর তালিকা ভুক্ত একজন লেখক ও কলামিস্ট।
তাঁর লেখা আপনাদের ভাল লাগলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্টস করে দয়া করে আমাদের উৎসাহিত করবেন। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখকের বিরুদ্ধে তাঁর লেখা নিয়ে আপনার কোন অভিযোগ থাকলে আপনি আমাদের অভিযোগ ডেস্ক-এ অভিযোগ করতে পারেন। ইনফোটেকলাইফ.কম কোন লেখকের বিতর্কিত লেখার দায়ভার বহন করেনা। তবে আপনার করা অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হলে উক্ত লেখককে অস্থায়ী কিংবা গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। ইনফোটেকলাইফ.কম এর সাথে যুক্ত থাকতে নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে Join,Like ও Follow করুন।
তাঁর লেখা আপনাদের ভাল লাগলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্টস করে দয়া করে আমাদের উৎসাহিত করবেন। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখকের বিরুদ্ধে তাঁর লেখা নিয়ে আপনার কোন অভিযোগ থাকলে আপনি আমাদের অভিযোগ ডেস্ক-এ অভিযোগ করতে পারেন। ইনফোটেকলাইফ.কম কোন লেখকের বিতর্কিত লেখার দায়ভার বহন করেনা। তবে আপনার করা অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হলে উক্ত লেখককে অস্থায়ী কিংবা গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। ইনফোটেকলাইফ.কম এর সাথে যুক্ত থাকতে নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে Join,Like ও Follow করুন।
No comments:
Post a Comment